টীকা লেখো: রোবসপিয়র (Robespierre) ।

উত্তর :-

ফ্রান্সে যে সন্ত্রাসের শাসন চলেছিল তার প্রধান পরিচালক ও কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন রোবসপিয়র। তিনি ছিলেন জেকোবিন দলের সর্বাপেক্ষা আদর্শবাদী, সৎ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির নেতা। তাঁর নেতৃত্বে ফ্রান্সে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের জুন থেকে ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস পর্যন্ত যে চরম সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলেছিল, তাকে ইতিহাসে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ বলা হয়।

টিকা রোবসপিয়র

রোবসপিয়রের উত্থানের পটভূমি :-

ফরাসি সম্রাট ষোড়শ লুই-এর প্রাণদণ্ডের পর (২১ জানুয়ারি, ১৭৯৩ খ্রি.) ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ক্ষেত্রে এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়-১) ফ্রান্সের অভ্যন্তরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যাভাব চরম অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে। ২)রাজতন্ত্রের সমর্থকগণ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ৩) ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ (ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, পোর্তুগাল, স্পেন প্রভৃতি) শক্তিজোট গঠন করে এবং যুদ্ধ ঘোষণা করে। এই অবস্থায় বিপ্লবী নেতৃবৃন্দ সন্ত্রাসের শাসন শুরু করেন এবং এভাবেই রোবসপিয়রের উত্থানের পটভূমি রচিত হয়।

রোবসপিয়রের ‘লাল সন্ত্রাস’ (Red Terror) :-

রোবসপিয়র একে একে সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যা করে ফ্রান্সের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২ জুন থেকে ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জুলাই পর্যন্ত ফ্রান্সে চরম সন্ত্রাস চলে। গিলোটিন যন্ত্রে অসংখ্য মানুষের শিরচ্ছেদ করা হয়। ফ্রান্সের ইতিহাসে এই ঘটনা ‘লাল সন্ত্রাস’ (Red Terror) নামে পরিচিত।

গিলটিন-যন্ত্রে রাজার দন্ড

রোবসপিয়রের পতন :-

রোবসপিয়রের সন্ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে ফ্রান্সের জিরন্ডিন এবং মধ্যপন্থী দলের সদস্যরা এমনকি জেকোবিন দলের বেশ কিছু সদস্য, যারা এই লাল সন্ত্রাসকে মেনে নেয়নি, তারা রোবসপিয়রকে বন্দি করে (২৭ জুলাই, ১৭৯৪)। পরদিন অর্থাৎ ২৮ জুলাই গিলোটিন যন্ত্রে রোবসপিয়রের শিরশ্ছেদ করা হয়। ফলে রোবসপিয়র ও তাঁর সন্ত্রাসের শাসনের অবসান ঘটে।


Note:- আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই নিচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন. ধন্যবাদ


*অন্যান্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন

ফরাসি বিপ্লবে নারীদের ভূমিকা বা অবদান আলোচনা করো
দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লব কাকে বলে
ফরাসি বিপ্লবের প্রভাব ফলাফল ব্যাখ্যা

Leave a comment